বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ভারত একতরফাভাবে কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি বাতিল করতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের এখানে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা যেটুকু বাণিজ্যিক সুবিধা পেতাম ভারতের কোলকাতা বিমানবন্দরে পশ্চিমবাংলার বরাতে, সেই সুযোগ তারা বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নিয়ে আমরা নেপাল ও ভুটানের মতো দেশে কিছুটা বাণিজ্যিক পণ্য রপ্তানি করতে পারতাম। এভাবে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি এককভাবে ভারত বন্ধ করতে পারে না। এটা ভারতের কোনো সৎ প্রতিবেশির কাজ নয়, বন্ধুত্বেরও কোনো নমুনা নয়।
তিনি আরও বলেন, ক’দিন আগে মাত্র ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছিল, তাতে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম যে আট মাস পরে হয়তো আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ কিছুটা গলতে শুরু করেছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, ভারত কার্যত সেই বৈঠকের পর থেকেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
সাইফুল হক পরিষ্কারভাবে বলেন, “আপনারা একতরফাভাবে এভাবে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি বাতিল করতে পারেন না। আমি বাংলাদেশ সরকারকে বলতে চাই—আমাদের হাতের যে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, যেটা ভারতের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল, এরকম অনেকগুলো প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যাবতীয় দেশবিরোধী, নিরাপত্তাবিরোধী চুক্তিগুলো প্রকাশ করা দরকার, পর্যালোচনা করা দরকার। যেগুলো জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী, সেগুলো বন্ধ করা দরকার।”
সাইফুল হক অভিযোগ করে বলেন, “ভারত বাংলাদেশকে হাসিনার জামানার মতো ক্লায়েন্ট স্টেট হিসেবে রাখতে চায়, মনে করে বাংলাদেশ একটি অনুগত রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে—এই চেতনা থেকে আপনাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আট মাস পার হয়েছে, এখনো পর্যন্ত অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের যে নতুন গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এখনো তা থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি।”
তিনি বলেন, “আমরা বলতে চাই, হাসিনার চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখলে আপনারা ভুল করবেন। ভারতের নীতিনির্ধারকদের বলতে চাই—দেশের উস্কানি দেওয়া দলের সাথে নয়, এ দেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন। আমরা সৎ প্রতিবেশির সাথে বসবাস করতে চাই।”