ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে ঘিরে দেশজুড়ে উত্তেজনা ও প্রস্তুতি চলছে। এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের শীর্ষস্থানীয় নেতা আল্লামা মামুনুল হক বলেন, “আশা করছি আগামীকাল বাংলাদেশে একটি ইতিহাস রচিত হবে — সেই ইতিহাস হবে ন্যায়বিচারের পক্ষে, শান্তির পক্ষে।”
তিনি বলেন, “আমরা জানি এবং সারা বিশ্ব জানে যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নেতৃত্বে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে যে বিভৎস গণহত্যা চলছে, তা এখন চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেছে। নারী-শিশু থেকে শুরু করে দুগ্ধপায়ী শিশু পর্যন্ত নির্বিচারে হত্যার শিকার হচ্ছে। এই দৃশ্য গোটা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে।”
আল্লামা মামুনুল বলেন, “আজ পশ্চিমা বিশ্ব থেকেও, এমনকি ইসরায়েলের মিত্র রাষ্ট্র আমেরিকার রাস্তাও শান্তিকামী মানুষের প্রতিবাদে উত্তাল। ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা বিশ্ব আজ ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার। সেই প্রতিবাদের ঢেউ বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। মুসলিম বিশ্ব তো আগুন হয়ে আছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য, গাজাবাসীদের পাশে দাঁড়াতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেশের প্রতিটি প্রান্তে বিক্ষোভ হচ্ছে, প্রতিবাদ হচ্ছে। আলেম সমাজ ও মুসলিম বিশ্বের বরেণ্য ফকীহগণ ফতোয়া দিয়েছেন — এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা মুসলিম শাসকদের জন্য ফরজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিশ্ব দরবারে যার গ্রহণযোগ্যতা অনন্য— আমরা আশাবাদী, তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন।”
আল্লামা মামুনুল হক সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই বিক্ষোভ কোনোভাবেই বিশৃঙ্খল বা সহিংসতায় রূপ নিতে দেওয়া যাবে না। কেউ যেন ভাঙচুর, লুটপাট, জানমালের ক্ষতির মতো কোনো অনভিপ্রেত কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করে।”
তিনি জানান, সলিডারিটি মুভমেন্টের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সবাইকে সেগুলো অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি মুভমেন্টের হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে।
আল্লামা মামুনুল বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালন করে বিশ্বকে জানাতে চাই— বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পাশে আছে। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।”